• জাতীয়

    যে কারণে, থমকে গেছে শিক্ষকদের বহুল কাঙ্খিত বদলি

      প্রতিনিধি ২৫ অক্টোবর ২০২৫ , ১:৩২:০৮                        

    ইসলাম ডেস্ক: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে জটিলতা কাটছেই না। সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে শুরু আদালতে রিট; সবশেষ বদলি নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগের ফলে থমকে গেছে শিক্ষকদের বহুল কাঙ্খিত বদলি। এর ফলে মানসিক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নিজ বাড়ির কাছের প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অপেক্ষায় কয়েক লাখ শিক্ষক।

    আরো পড়ুন:

    যে কারণে, এখনো মাদরাসার শিক্ষক – কর্মচারীরা ভোগান্তিতে

    যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বদলি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী তারা। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, ২০২৫ সালে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

    এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বদলি সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শিক্ষকদের বদলি চালু করার জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বদলির কোনো সুযোগ নেই। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন তারা। তবে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয় সরকার। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েন নিজ বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে চাকরি করা শিক্ষকরা। একইসঙ্গে নারী শিক্ষকদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

    ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ হওয়ার পর বদলি চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বদলি চালুর উদ্যোগ নেন। প্রাথমিকভাবে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নানা শর্তে বদলি চালুর জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে সরকার। এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির পর মাউশির এক পরিচালকের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। তবে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।

    মাউশির একটি সূত্র জানিয়েছে, আইসিটি মন্ত্রণালয়ে অধীন পরিচালিত এক্সেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই’র মাধ্যমে নতুন সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ সফটওয়্যার তৈরিতে কতদিন সময় লাগবে সেটি নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি কেউ। এছাড়া বদলি নীতিমালা সংশোধন এবং সব ইনডেক্সধারী শিক্ষককে বদলির আওতায় নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করতে হবে। এ অবস্থায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বদলি চালু করা নিয়ে সংশয়ে মাউশি।

    নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির একজন উপ-পরিচালক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসেকে বলেন, বদলি সফটওয়্যার তৈরির জন্য এটুআইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ চিঠির উত্তর আমরা এখনো পাইনি। চিঠিতে সফটওয়্যার তৈরিতে কেমন খরচ হবে এবং কতদিন সময় লাগবে তার একটি ধারণা দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে যেহেতু বদলি নীতিমালা সংশোধন করা হবে, সেহেতু আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শিক্ষকদের বদলি চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। এটি বাস্তবায়ন করতে আরও সময় লাগবে।

    প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা অনুযায়ী গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে সেপ্টেম্বর পেরিয়ে অক্টোবর শেষ হতে চললেও এখনো বদলির জন্য শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। এ অবস্থায় হতাশ হয়ে পড়েছেন বদলির অপেক্ষায় থাকা শিক্ষকরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলি কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

    আরও খবর

    Sponsered content