কৃষি

শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ভারী ধাতু, ফলে কীটনাশক: গবেষণা

  প্রতিনিধি ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১১:৩৫:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

ইসলাম ডেস্ক: শাক-সবজিতে ভারী ধাতু ও ফলে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া গেছে। সোমবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ কক্ষে অনুষ্ঠিত গবেষণার ফলাফল অবহিতকরণ সেমিনারে গবেষণাসমূহের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

সেমিনারে ৯টি সবজিতে হেভি মেটালের উপস্থিতি এবং ৪টি ফলে কীটনাশকের রেসিডিউর নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা চাইলে হিজাব পরতে পারবেন
গবেষণায় দেখা গেছে, এসব সবজিতে লেড, ক্রমিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কয়েকটি রাসায়নিকের উচ্চমাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মাত্রায় হেভি মেটালের উপস্থিতি পাওয়া গেছে লালশাকে।

সম্প্রতি সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া। তারা বাজার থেকে ৯ ধরনের সবজি সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল আলু, বেগুন, ঢেঁড়স, টমেটো, লালশাক, পটোল, বাঁধাকপি, শসা ও মটরশুঁটি।

গবেষণায় উঠে এসেছে, লালশাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু পাওয়া গেছে। যেখানে ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১৯০ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, সেখানে লালশাকে পাওয়া গেছে ৭০৪.৩২ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। বেগুনে পাওয়া গেছে ২৭৫.৬৬ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, ঢেঁড়সে ৩৪৯ মাইক্রো গ্রাম ও টমেটোতে ১৯৫ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ উপস্থিতি পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে।

একইভাবে ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটোল ও লালশাকে। লেডের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটল, টমেটো ও লালশাকসহ ৯টি সবজিতে।

গবেষকরা জানান, যেসব সবজিতে হেভি মেটাল রয়েছে সেগুলো দীর্ঘদিন খেলে ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এদিকে ফলের গবেষণা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রধান। তার গবেষক দলের পরীক্ষায় আম, লিচু, বরই ও পেয়ারার ৩২০টি নমুনায় কীটনাশক রেসিডিউ পরীক্ষা করে গড়ে ১০ শতাংশের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের খাদ্যচক্রে এসব ভারী ধাতুর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। তবে সেজন্য নির্দিষ্ট কোনো ফসল বা খাদ্যপণ্য নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে খাদ্য উৎপাদনের উৎসে বিষ ছড়ানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে হেভি মেটাল বা ভারী ধাতু নিয়ন্ত্রণে সার ও কীটনাশক ব্যবহার ‘নিরাপদ’ করতে হবে। আমদানি করা কীটনাশকে ভারী ধাতু যেন না থা‌কে এটাও নিশ্চিত করা জরুরি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক ড. শামশাদ বেগম কোরাইসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল রউফ মামুন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া প্রমুখ।