প্রতিনিধি ২৫ জুন ২০২৫ , ১:০০:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলাম ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবের্ডের অধীনে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে স্টারমার্ক পেয়ে দাওরায়ে হাদিস পাস করা আরিফুল ইসলাম আব্বাদ (ছদ্মনাম) ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজধানীর একটি স্বনামধন্য মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
তিনি ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আরবি প্রভাষক (বিষয় কোড: ৪২৯) প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ভাইভায় অংশগ্রহণ করেন। তাকে ভাইভায় নাহু-সরফ (আরবি গ্রামার) থেকে মোট ১৭টি প্রশ্ন করা হয়, তিনি ১৫টিরই সঠিক উত্তর দেন।
সনদপত্রে কোনো সমস্যা নেই, ভাইভাও ছিল প্রাণবন্ত। তিনি ভাবতেই পারেননি তিনি অনুত্তীর্ণ হবেন। ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তিনি অনুত্তীর্ণ।
আরিফুল ইসলামের মতোই প্রায় ২ হাজার চাকরি-প্রত্যাশী প্রভাষক আরবি পদে ভালো ভাইভা দিয়েও অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। আরবি প্রভাষকে (মাদরাসা) প্রায় ৪৭ শতাংশ প্রার্থীই ফেল করেছেন।
শুধু আরবি বিষয়েই নয়, অন্যান্য বিষয় মিলে ২০ হাজারেরও বেশি প্রার্থী অনুত্তীর্ণ হয়েছেন, যা শিক্ষক নিবন্ধনের ইতিহাসে একদমই বিরল। ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আরেকটি বড় সমস্যা হয়েছে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত ‘প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টন’-বহির্ভূত প্রশ্ন করা।
নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর, কিন্তু এরও ৫ মাস পর ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল এনটিআরসিএ তাদের ওয়েবসাইটে পরিবর্তিত ‘সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টন’ প্রকাশ করে। কিন্তু দুঃখজনক, প্রার্থীদের প্রস্তুতির সাড়ে ৫ মাস সময় অতিবাহিত হওয়ার পর প্রকাশিত সে পরিবর্তিত ‘সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টন’ অনুযায়ী প্রশ্ন করেনি।
প্রভাষক আরবি, মাদরাসার (বিষয় কোড: ৪২৯) বিষয়ে প্রকাশিত ওই সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টন অনুযায়ী আত-তাফসীর অংশের মান ২০। সেখানে অনুবাদে ৮ নম্বর রাখা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে অনুবাদে ২টি অংশ থাকবে, ১টির উত্তর দিতে হবে। ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রভাষক আরবির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ২টি অংশ ছিল না, ১টিই ছিল।
তার চেয়ে বড় সমস্যা হলো স্ববিরোধী প্রশ্ন। অনুবাদের ৮ নম্বর যাওয়ার পর নিচে ৩টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দিয়ে ৩টি থেকে যেকোনো ২টি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ৩টি প্রশ্নের সঙ্গেই ৪ করে নম্বর করে দেওয়া আবার উত্তর চাওয়া হয়েছে দুটির। উপরে লেখা ‘২টি প্রশ্নের উত্তর দিন’ অনুযায়ী উত্তর দিলে প্রশ্নের পাশে দেওয়া নম্বর হয় ৮।
তা ছাড়া তাহকিকের জন্য প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টনে বলা হয়েছে, ‘৬টি শব্দ থাকবে; ৪টির তাহকিক করতে হবে’। কিন্তু প্রশ্নপত্রে ৬টি শব্দ ছিল না, ৪টিই ছিল। প্রশ্নপত্রে কুরআনের সুরা হুজুরাতের ১১নং আয়াতের অনুবাদ করতে বলা হয়। কিন্তু সে আয়াতের শব্দ ‘তালমিযু’-এর স্থলে ‘তালতামিযু’ দেয়।
হাদিস অংশে অন্তত ৩টি শব্দ ভুল দেয়। তা ছাড়া হাদিস অংশের অনুবাদের জন্য প্রদত্ত প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টনে বলা হয়েছে, ‘২টি হাদিস থাকবে; ১টির অনুবাদ লিখতে হবে’। কিন্তু প্রশ্নপত্রে ২টি হাদিস ছিল না।
এ অংশে তাহকিকের জন্য প্রদত্ত প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টনে বলা হয়েছে, ‘৬টি শব্দ থাকবে; ৪টির তাহকিক করতে হবে’। কিন্তু প্রশ্নপত্রে ৬টি শব্দ ছিল না, ৪টি ছিল।