অসত্য সংবাদের প্রচার ঠেকাতে জাতিসংঘের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা - protidinislam.com | protidinislam.com |
অপরাধ

অসত্য সংবাদের প্রচার ঠেকাতে জাতিসংঘের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

  প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২৫ , ১:৩৬:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ


ইসলাম ডেস্কঃ
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমে ভুয়া খবর (ডিজইনফরমেশন) ও বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, স্ব-নিয়ন্ত্রিত ও নৈতিক মানদণ্ডে পরিচালিত গণমাধ্যম গড়ে তুলতে জাতিসংঘের সহায়তা দরকার। এ সময় তিনি জাতিসংঘকে সরকার এবং সংবাদমাধ্যম উভয়ের সঙ্গে সমানভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ইসলামি বিশ্ব্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি পরিদর্শন করেন ইসলামি ফাউন্ডেশনের ডিজি

বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্যুজান ভাইজ এবং সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার মেহদি বেঞ্চেলাহ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। সাক্ষাতের প্রেক্ষাপট ছিল, ‘অ্যান অ্যাসেসমেন্ট অব বাংলাদেশ’স মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ: ফোকাসিং অন ফ্রি, ইনডিপেন্ডেন্ট অ্যান্ড প্লুরালিস্টিক মিডিয়া’ (An Assessment of Bangladesh’s Media Landscape: Focusing on Free, Independent and Pluralistic Media) শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন, যা ইউনডিপি ও ইউনেস্কোর যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমাদের প্রধান সমস্যা হলো ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য। এর একটি অংশ দেশের বাইরে থেকে ছড়ানো হয়, আবার কিছু স্থানীয় উৎসও রয়েছে। এটা এক ধরনের টানা বোমাবর্ষণের মতো।” তিনি উল্লেখ করেন, শুধু অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যম নয়, প্রচলিত গণমাধ্যমও এই ধরণের ভুয়া তথ্যের উৎস হয়ে উঠেছে। এ কারণে গণমাধ্যমে স্বাধীন ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকা জরুরি।

তিনি জাতিসংঘকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা শুধু সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন না, গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলবেন।” একই সঙ্গে তিনি মত দেন, কোনো গণমাধ্যম যদি বারবার ভুয়া তথ্য ছড়ায়, তবে তাকে আস্থা হারানোর বিষয়ে সতর্ক করতে হবে। “আপনারা জাতিসংঘ। আপনাদের কথা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আপনাদের সহায়তা দরকার,”— বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

এ সময় ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্যুজান ভাইজ জানান, প্রতিবেদনটি মূলত স্বাধীন ও নৈতিক সাংবাদিকতা, স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকে তৈরি। প্রতিবেদনে কী কাজ করছে এবং কী করছে না, তার বিশ্লেষণসহ গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ থাকবে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সরকারি কর্মকর্তা ও বিচার বিভাগের মান উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

ইউনেস্কোর সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার মেহদি বেঞ্চেলাহ জানান, প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ এবং বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়েও সুপারিশ থাকবে। তার মতে, সরকারের কার্যকর উদ্যোগ এসব বিষয়ে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের ‘SIPS’ প্রকল্পের অধীনে এই গবেষণা তৈরি হয়েছে এবং এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যম উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউনেস্কোর ম্যান্ডেটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ও স্বনিয়ন্ত্রিত কাঠামো গঠনে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার ভূমিকা এখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য রোধে কেবল রাষ্ট্র নয়, মিডিয়া এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

আরও খবর

Sponsered content