🩺”সরকারি বেতন ভোগ করে ক্লিনিকে ব্যবসা—কে দেখবে?”

আজকের বাংলাদেশে একজন সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটি হচ্ছে—সঠিক সময়ে সুলভ চিকিৎসা পাওয়া।

আরো পড়ুন:

খুলনায় জামায়াতের আমিরের মৃত্যু

সরকার প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়াচ্ছে, হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন করছে, কিন্তু বাস্তব চিত্র এক নির্মম সত্য বলে দেয়:
“ডাক্তাররা হাসপাতালে নেই, তারা রয়েছেন ক্লিনিকে।”

👨‍⚕️ সরকারি চাকরি, কিন্তু সেবা নয়!

একজন সরকারি চিকিৎসক মাসে লক্ষাধিক টাকা বেতন পান, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন, অথচ তাকে যদি হাসপাতালে খুঁজে না পাওয়া যায়—তাহলে এটি কিসের শপথ? কিসের দায়িত্ব?

বলা হয়ে থাকে, “ডাক্তার ঈশ্বরের পরে মানুষকে বাঁচাতে পারে।” কিন্তু আমাদের সমাজে দেখা যায়, সেই ডাক্তারই হাসপাতালে রোগী না দেখে প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে রোগী দেখেন, কারণ সেখানে রোগীর কাছ থেকে ৫০০–১০০০ টাকা ‘ভিজিট’ পাওয়া যায়।

💸 চিকিৎসা এখন একটি ব্যবসা!

একজন দিনমজুর, একজন রিকশাচালক, একজন বৃদ্ধ পিতা—তারা অসুস্থ হলেও শুধুমাত্র ডাক্তার ভিজিটের টাকা জোগাড় করতে পারেন না। আর সেখানে কিছু ডাক্তার চিকিৎসা নয়, ব্যবসা করছেন।
“হাসপাতালে গেলে ডাক্তার নেই, সবাই বলে—স্যার এখন চেম্বারে, ওখানে গেলে ভালোভাবে দেখবে।”
এই কি আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা?

📉 নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক ব্যর্থতা

আমরা এমন সমাজ গড়তে চেয়েছিলাম, যেখানে একজন গরিব রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে। অথচ বাস্তবে, এই সমাজ গড়ে উঠছে এমনভাবে, যেখানে আপনি যত টাকা দেবেন, তত ভালো চিকিৎসা পাবেন।

হাসপাতাল কর্মঘণ্টার সময় সরকারি ডাক্তার যদি রোগী না দেখে প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে বসে থাকেন—তবে এটিকে আর কিছু নয়, এটি সরাসরি নীতিভ্রষ্টতা ও পেশাগত দুর্নীতি বলা যায়।

🛑 ভিজিট ১০০০ টাকা—সবাই কি পারবে?

আজকাল চিকিৎসকদের অনেকেই চেম্বারে রোগী দেখার জন্য ৮০০–১০০০ টাকা পর্যন্ত ভিজিট নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সঙ্গে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ব্যয়বহুল ওষুধ, টেস্টের লম্বা তালিকা, এবং নিজের পরিচিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অনৈতিক চর্চা চলছে প্রকাশ্যে।

প্রশ্ন হলো, দেশের অধিকাংশ মানুষ কি এই চিকিৎসা ব্যয় সামলাতে পারে?
উত্তর: না।

🔎 সমাধান কোথায়?

1. সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করতে হবে।

2. হাসপাতাল চত্বরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।

3. ডাক্তারদের মনিটরিং এবং সময়ানুযায়ী রিপোর্টিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

4. ভিজিটের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করতে হবে।

5. সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যয় সরকারিভাবে ভর্তুকির আওতায় আনতে হবে।

❤️ চিকিৎসা পেশা মানবতার সেবা, ব্যবসা নয়!

চিকিৎসকদের সম্মান আমাদের সমাজে সবচেয়ে উঁচুতে। তাই আমরা চাই—এই মহান পেশাটি তার মহত্ত্ব বজায় রাখুক।
একজন রোগীর কষ্টে ডাক্তার যেন বাণিজ্যের সুযোগ না খোঁজেন, বরং একজন মা যেমন সন্তানকে সেবা দেন, তেমনি ভালোবাসা ও মমতা নিয়ে একজন ডাক্তার যেন মানুষকে সুস্থতার পথ দেখান।

—

🔴 এই লেখাটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন। কেউ না কেউ প্রশ্ন তুলবেই—ডাক্তারদের এভাবে হাসপাতাল ছেড়ে ক্লিনিকে যাওয়ার দায় কে নেবে?

এম এ সাইদ (তন্ময়)
(সামাজিক বিশ্লেষক ও স্বাস্থ্যসচেতন কলাম লেখক)

প্রতিদিন ইসলাম অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে
Google News ক্লিক করুন।

🔔 ফলো করুন


📲 অ্যাপ ডাউনলোড


📢 বন্ধুকে শেয়ার করুন