প্রতিনিধি ৬ আগস্ট ২০২৫ , ২:২৬:৫০
ইসলাম ডেস্ক: জুলাই ঘোষণাপত্রে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের নৃশংসতার বিচারের কোনো প্রতিশ্রুতির উল্লেখ না থাকায় হতাশা ও বিস্ময় ব্যক্ত করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা।
আরো পড়ুন:
নির্বাচনের আগে সংস্কার ও নিরপেক্ষতা চায় এনসিপি
বুধবার (০৬ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতিতে এ হতাশা প্রকাশ করেন সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, মূলত শাপলা চত্বরের গণপ্রতিরোধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও তৌহিদি জনতা দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
অকাতরে রক্ত দিয়েছে; জান দিয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা গণহত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি দূরের কথা, কোনো উল্লেখই নেই!
ঘোষণাপত্র পাঠকালে হেফাজত নেতারা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও এমনটি হয়েছে। ফলে এটি যে সচেতনভাবে করা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। ওলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা এতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন।
আমরা হতাশ ও বিস্মিত! সামনে দিন আরও আছে। এই উপেক্ষার বিষয়টি অবশ্যই আমাদের মনে থাকবে।
তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে দেশের সমগ্র ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদি জনতা শাহবাগী-আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও হিন্দুস্তানি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ ও গণ-আন্দোলনের অভূতপূর্ব নজির গড়ে তুলেছিল। ওই বছরের ৫ মে ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে হেফাজতে ইসলাম। সেদিন মতিঝিল শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাতের আঁধারে নিরীহ-নিরস্ত্র আলেম-ওলামা ও মাদরাসাছাত্রদের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার যৌথবাহিনী।
তারা বহু লাশ গুম করেছিল। সেই নারকীয় গণহত্যা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। এছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর মোদির আগমনবিরোধী গণপ্রতিরোধেও শহীদ হন প্রায় দুই ডজন আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী।
নেতারা বলেন, শাপলার শহীদদের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা আজও সেই ভয়াল কালরাতের ট্রমা থেকে বের হতে পারেননি। তারা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন; নিজেদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
কারণ এখনো গণহত্যাকারী হাসিনার সাজানো প্রশাসন ও গোয়েন্দা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। অত্যাচারীরা এখনো বহাল। সাক্ষীদের দীর্ঘদিনের মানসিক ভীতি ও ট্রমা কাটাতে এবং তাদের আস্থায় আনতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তা নাহলে শাপলা গণহত্যার বিচারকাজ আগানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার ষোল বছরের শাসনজুড়ে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী গণপ্রতিরোধের প্রেরণা ও পথিকৃৎ হেফাজতে ইসলাম। তেরো সালে শাহবাগী ফ্যাসিবাদকে রুখে না দিলে বাংলাদেশ বহু আগেই সামরিকভাবেও দিল্লির উপনিবেশে পরিণত হয়ে যেত।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ওলামায়ে কেরামের আত্মত্যাগ ও অবদান ভুলিয়ে দেওয়া যাবে না। ইসলামবিদ্বেষী সেক্যুলাররা কখনোই এতে সফল হতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।