ইসলাম

জেনে নিন হজ ও উমরার পার্থক্য

  প্রতিনিধি ৯ আগস্ট ২০২৫ , ২:০৩:৪৮                        

ইসলাম ডেস্ক: হজ ও উমরা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি। ইসলামের যে মূল পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে, যার কোনও একটি অস্বীকার করলে একজন মানুষ মুসলমান থাকে না, তার একটি হজ।

আরো পড়ুন:

মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানালেনঃ ধর্ম উপদেষ্টা

অপরদিকে উমরা হলো- সুন্নত ইবাদতের অন্তভূর্ক্ত। এ বিষয়ে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস এসেছে, উমরা করা ওয়াজিব কি-না হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বলেছেন, না; তবে যদি উমরা করো তা হবে উত্তম। -জামে তিরমিজি: ৯৩১

কোরআন-হাদিসে উমরা প্রসঙ্গ

উমরা প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলির অন্যতম, তাই যারা হজ করবে বা উমরা করবে; তারা এতদুভয়ের প্রদক্ষিণ (সাঈ) করবে।’ -সূরা বাকারা: ১৫৮

কোরআনে কারিমের অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও উমরা পরিপূর্ণভাবে পালন করো।’ -সূরা বাকারা: ১৯৬

উমরার ফজিলত

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক উমরা থেকে পরবর্তী উমরা পর্যন্ত মাঝখানের গোনাহগুলোর জন্য কাফফারা স্বরূপ।’ -সহিহ বোখারি: ১৬৮৩

বার বার হজ-উমরা করা জরুরি নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে বার বার হজ-উমরা করা যেতে পারে। কেননা, হাদিসে হজ-উমরা বার বার করার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও উমরা একটার পর অপরটা করো। কেননা, হজ ও উমরা দারিদ্র্য বিমোচন ও গোনাহ দূর করে দেয় ঠিক সেভাবে, যেভাবে হাঁপরের আগুন লোহা, সোনা ও রুপা থেকে ময়লা দূর করে দেয়।’ -জামে তিরমিজি: ৮১০

পরিভাষায় উমরা

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় উমরা বলা হয়, নিয়ত করে ইহরামসহ কাবা শরিফের চারপাশ সাতবার তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাতবার সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডানোকে।

হজ নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা আবশ্যক হলেও উমরা পালনের বিশেষ কোনো সময় নেই। তবে হজের নির্ধারিত বিশেষ সময়ে (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিন) উমরা পালন করা বিধেয় নয়। এই পাঁচ দিন ছাড়া বছরের যেকোনো দিন যেকোনো সময় উমরা পালন করা যায়।

একই সফরে একাধিক উমরা করতে কোনো বাধা নেই। হজের আগেও (হজ না করেও) উমরা করা যায় এবং হজের পরও বারবার উমরা করা যায়। তবে রমজান মাসে উমরা পালনে হজের সমান সওয়াব মিলে। আর শাওয়াল মাস উমরা করার উত্তম সময়।

হজ ও উমরার পার্থক্য

হজ ও উমরার মধ্যে অনেক ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান। হজ ফরজ থাকা অবস্থায় তা আদায়ের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হজ সম্পন্ন না করে বারবার উমরা করা অযৌক্তিক। কারণ, শত-সহস্র উমরা হজের সমকক্ষ নয়। অনুরূপভাবে উমরা আদায় করলে হজ ফরজ হয়ে যায়, এমনটিও সঠিক নয়। হজ যেমন জীবনে একবার করা ফরজ, তেমনি উমরা জীবনে অন্তত একবার করা সুন্নত। এখানে পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো-



১. হজ ফরজ, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তাদের জীবনকালে এটি পালন করা বাধ্যতামূলক যদি তারা শারীরিকভাবে উপযুক্ত এবং আর্থিকভাবে এটি করতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে উমরা সুন্নত।

২. হজ এক নির্দিষ্ট সময়ে করতে হয় কিন্তু উমরা বৎসরের যেকোনো সময়ই করা যায়। তবে ৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত উমরা করা মাকরূহ।

৩. উমরার মধ্যে আরাফাত ও মুযদালিফায় অবস্থান, দু’নামাজ একসঙ্গে আদায় করা ও খুতবার বিধান নেই। তাওয়াফে কুদূম এবং তাওয়াফে বিদাও নেই কিন্তু এই সব কাজ হজের মধ্যে রয়েছে।

৪. উমরার মধ্যে তাওয়াফ আরম্ভ করার সময় তালবিয়াহ পড়া মওকুফ করা হয়। আর হজের মধ্যে জামরাতুল আক্বাবাতে রমি (কংকর নিক্ষেপ) করার সময় মওকূফ করা হয়।

৫. উমরা নষ্ট হলে বা জানাবত (ওই নাপাকী যা দ্বারা গোসল ফরজ হয়) অবস্থায় তাওয়াফ করলে (দম হিসেবে) একটা ছাগল বা মেষ জবেহ করা যথেষ্ট, কিন্তু হজে তা যথেষ্ট নয় বরং পরবর্তী বছর পুনরায় সম্পন্ন করতে হয়।

Google News

প্রতিদিন ইসলাম অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে
Google News ক্লিক করুন।

আরও খবর

Sponsered content