প্রতিনিধি ১৩ আগস্ট ২০২৫ , ৪:০০:৫৬
ইসলাম ডেস্ক: আমল আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের সিঁড়ি। শান্তি ও সাফল্যের পথ। সমৃদ্ধি ও সচ্ছল জীবনের বাহন। মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা লাভের উপায়। নেক আমলের উসিলায় লাভ হয় চির শান্তির জান্নাত।
আরো পড়ুন:
আল্লাহ তায়ালা বলেন- যারা ঈমান এনে নেক আমল করেছে, নেক আমলের বিনিময়ে আতিথ্যস্বরূপ তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। (সূরা আস সাজদাহ: আয়াত ১৯)
আমলে আমলে কাটে মুমিনের সময়। সৎ কাজে খুঁজে পায় সুখ ও সজীবতা। নবীজি ইরশাদ করেন- যদি নেক আমল তোমাকে আনন্দ দেয় এবং পাপ তোমাকে কষ্ট দেয় তাহলে তুমি মুমিন। (সহিহ মুসলিম: ২৫৫১)
প্রতিটি মুমিনের লালিত স্বপ্ন জান্নাত। যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে ঈমানদার তা অর্জন করতে চায়। নিজের জান মালসহ সবকিছু দিয়ে জান্নাতের বাধাকে উপেক্ষা করতে চায়। মুমিনের প্রত্যাশিত সেই জান্নাতের বাধা দূর করার উপায় বলে দিয়েছেন নবীজি।
হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। নবীজি বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, মৃত্যু ছাড়া জান্নাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তার অন্য কোনো বাধা থাকবে না। (সুনানে নাসায়ি: ৯৪৪৮)
মানুষকে ঈমান আমল থেকে বিচ্যুত করে শয়তান। কারণ জান্নাতের পথে বাধা সৃষ্টি করাই তার মূল পেশা।
এই শয়তায় থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হলো আয়াতুল কুরসি পাঠ।
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, একবার নবীজি আমাকে সম্পদ পাহারার দায়িত্ব দিলেন। আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন রাতে এক ব্যক্তি তাতে চুরি করতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে নবীজির কাছে নিয়ে যাব। সে কাকুতি মিনতি করে বললো, আমি গরীব, আমার পরিবার আছে, আমার খুব প্রয়োজন। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।
সকালে নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, গত রাতের বন্দীকে কি করলে? আমি বললাম, সে দরিদ্রতার অজুহাত দেখিয়েছে। তাই আমি দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। নবীজি বললেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, ও আবার আসবে।
দ্বিতীয় রাতেও সে এলো। আমি তাকে ধরে ফেললাম। সে আবার আগের মতো অজুহাত দেখালো। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। এবারও সব শুনে নবীজি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে, ও আবার আসবে।
তৃতীয় রাতে সে এলো। আগের মতো এবারও তাকে ধরলাম। তাকে বললাম, এবার আর তোমাকে ছাড়ব না। নবীজির কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমি তোমাকে কিছু শিক্ষা দেই। তুমি উপকৃত হবে। যখন তুমি ঘুমাতে যাবে, আয়াতুল কুরসি পড়ে নিও। তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন হেফাজতকারী নিয়োগ করবেন এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।
আমলের সজীবতায় কাটুক প্রতিটি মুহূর্ত। আল্লাহর রহমত ফোয়ারার সিক্ত হোক সকল মুমিন। কেটে যাক জান্নাত লাভের সব বাধা।
লেখক: শিক্ষক, শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা, ঢাকা-১২১৯