লাইফ স্টাইল

আপনার অ্যাপেন্ডিসাইটিস বুঝবেন কীভাবে, জেনে নিন এর লক্ষণ ও প্রতিকার

  প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২৫ , ৪:৪১:৫০                        

ইসলাম ডেস্ক: সাধারণত পেটব্যথার চেয়েও অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথার পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে থাকে। আর এটি একটি জটিল রোগ, তাই একে অবহেলা করা যাবে না। এর থেকে জীবনহানিও হতে পারে। আর এ জন্য সমাধান হিসেবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করে থাকেন চিকিৎসকরা।

আরো পড়ুনঃ

প্যারামেডিকেল শিক্ষা: ডিগ্রি আছে, ভবিষ্যৎ অন্ধকার

বৃহদান্ত্র বা মলাশয়ের নিচের দিকে যুক্ত থাকা পেটের ডান দিকে আঙুলের সমান থলের মতো ছোট অংশটির নাম হচ্ছে অ্যাপেন্ডিক্স। আর এতে সংক্রমণ হলে তাকে বলা হয় অ্যাপেন্ডিসাইটিস। জনহপকিন্স মেডিসিন ডটঅর্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে রোগপ্রতিরোধের অংশ হিসেবে কাজ করে অ্যাপেন্ডিক্স।

আর মূলত হয় কী কারণে, তা আমাদের জানা ভীষণ জরুরি। এটি মূলত অ্যাপেন্ডিক্সের আস্তরণ, যাকে ‘লুমেন’ বলা হয়, সেটিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে অ্যাপেন্ডিসাইটস হয়। ফলে অ্যাপেন্ডিক্স ফুলে যায়, আর শুরু হয় ব্যথা।

সাধারণত নানা কারণে এ রোগ হতে পারে। যেমন— ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া বা অন্ত্রে থাকা পরজীবীর আক্রমণ। বৃহদান্ত্রের সঙ্গে অ্যাপেন্ডিক্স যে নলের মাধ্যমে যুক্ত থাকে, সেটাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলেও বা মল আটকে গেলে এ সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, টিউমারের কারণেও অ্যাপেন্ডিসাইটস হতে পারে।

আর অ্যাপেন্ডিক্স ফুলে যাওয়া মানে, সেখানে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এরপর ব্যথা ও ফোলার পরিমাণ বাড়তে থাকে। দেহের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় রক্তপ্রবাহ জরুরি হয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহের অভাবে অ্যাপেন্ডিক্স হয়ে কেউ কেউ মারাও যেতে পারে। আর এর দেয়ালে ছিদ্র তৈরি হলে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সেই সঙ্গে ছিদ্র থেকে মল, ব্যাক্টেরিয়া, শ্লেষ্মা ইত্যাদি পেটের ভেতর ছড়িয়ে পড়ে, যাকে বলে ‘পেরিটোনাইটিস’।

এই মারাত্মক সংক্রমণ পেটে তখনই হয়, যখন অ্যাপেন্ডিক্স, অন্ত্রের যে কোনো অংশ কিংবা পাকস্থলীতে ছিদ্র তৈরি হয়ে নানান উপাদান বের হয়ে যেতে থাকে।

এখন জেনে নিন এসব ঝুঁকি কাদের বেশি হয়—

অ্যাপেন্ডিসাইটিস হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। এটি যে কারও যে কোনো সময় এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে— সাধারণত বয়স ১০ থেকে ত্রিশের মধ্যে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার যাদের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, তাদের অ্যাপেন্ডিসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; বিশেষ করে পুরুষের ক্ষেত্রে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা। জনহপকিন্স মেডিসিন জানাচ্ছে, অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে কিনা সেটি বোঝার সাধারণ কিছু উপসর্গ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে— তলপেটের ডান দিকে ব্যথা। যেমন— নাভির চারপাশজুড়ে ব্যথা শুরু হয়ে পেটের নিচের দিকে ডান পাশে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া। অথবা সরাসরি তলপেটের ডান দিকে ব্যথা।

আর সময়ের সঙ্গে ব্যথার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। নড়াচড়া, গভীর শ্বাস নেওয়া, স্পর্শ করলে বা কাশি দিলে ব্যথা আরও বেশি বোধ হয়। সেই সঙ্গে যদি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যায়, তবে পুরো পেটজুড়ে তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এ ছাড়া আরও লক্ষণ আছে—

১. পেট ফোলা

২. গ্যাস নির্গত হওয়াতে সমস্যা হওয়া

৩. পেট খারাপ করা ও বমি হওয়া

৪. কোষ্ঠকাঠিন্য

৫. জ্বরের সাথে ঠাণ্ডা বোধ হওয়া

৬. রুচি চলে যাওয়া

যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ব্যথানাশক ওষুধ না খেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আর প্রাথমিক অবস্থায় অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ সাধারণ সমস্যা বলে মনে হয়। তাই অবহেলা করা ঠিক হবে না, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

Google News

প্রতিদিন ইসলাম অনলাইনের খবর পেতে
Google News ক্লিক করুন।

আরও খবর

Sponsered content

🌟 Subscribe করুন 🌟

সাবস্ক্রাইব না করলে নিউজ পড়তে পারবেন না 📢