প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৫ , ৩:৪৭:২০
ইসলাম ডেস্ক: লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২৬। এসব বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজ দেখভালের দায়িত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিসের। কিন্তু বছরের পর বছর অফিসটিতে নেই অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কোনো জনবল। ফলে নথি-নিবন্ধন, অনলাইন তথ্য হালনাগাদ, বিল-ভাতা তৈরি, উপবৃত্তির তালিকা যাচাই-নিষ্পত্তিসহ দৈনন্দিন কাজে বিড়ম্বনায় পড়ছেন কর্মকর্তারা।
আরো পড়ুন:
১৩ জেলা প্রশাসককে ‘অতীব জরুরি’ চিঠি
শুধু আদিতমারী নয়, একই চিত্র দেশের বহু উপজেলায়। একাধিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা দেশের শিক্ষা অফিসগুলোতে অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহায়ক পদের জনবলসংকট ‘দীর্ঘস্থায়ী’ রূপ নিয়েছে। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তদারকি ও সেবা প্রদান ধীরগতি হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৪৯৫টি উপজেলার অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭। প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে এই বিপুলসংখ্যক বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, আর্থিক ও মাঠ তদারকির কাজ পরিচালিত হয়। বিধি অনুযায়ী, প্রতিটি অফিসে অন্তত তিনজন করে অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর বা অফিস সহায়ক থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে প্রয়োজনীয় লোকবল নেই বলেই অভিযোগ।
দেশের সকল জেলা–উপজেলা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শর্তসাপেক্ষে সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
ইমেইল ঠিকানা:
২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো কাজ এগোয়নি, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি জেনে বিস্মিত হয়েছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেব। দ্রুত সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা আছে
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, সারা দেশে অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটরের ৮০১টি পদ শূন্য। অফিস সহায়কের শূন্য পদ ১ হাজার ৫০৫টি। পদগুলো দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় ফাইল নড়াচড়া, মাঠপর্যায়ের তথ্য দ্রুত আপলোড, শিক্ষক-কর্মচারীদের বিল-ভাতা প্রস্তুত, ক্রয়সংক্রান্ত বিল যাচাই এবং বিভিন্ন প্রকল্পের দৈনন্দিন কাগজপত্রে বিলম্ব হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অফিস সহকারী ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। প্রায় তিন লাখ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই নিয়োগ পরীক্ষা আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতে, শূন্য পদ পূরণ হলে তথ্যপ্রবাহ, আর্থিক নিষ্পত্তি ও বিদ্যালয় তদারকি—সবকিছুর গতি বাড়বে। স্কুলপর্যায়ের সেবা নিতে আসা শিক্ষক-অভিভাবকেরও সময় বাঁচবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিটি আবেদনপত্রের বিপরীতে ২০০ টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছিল। হিসাবমতো, প্রায় ছয় কোটি টাকা এখনো মন্ত্রণালয়ের তহবিলে জমা রয়েছে। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ায় শূন্য পদ বাড়তে বাড়তে মাঠপর্যায়ের কাজের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ের দাপ্তরিক কাজ সচল রাখতে এসব পদে পর্যাপ্ত জনবল থাকা জরুরি। ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো কাজ এগোয়নি, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি জেনে বিস্মিত হয়েছি। আমরা সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব। ২০১৭ সালের আবেদনকারীরাও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা আছে।’
মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতে, শূন্য পদ পূরণ হলে তথ্যপ্রবাহ, আর্থিক নিষ্পত্তি ও বিদ্যালয় তদারকি—সবকিছুর গতি বাড়বে। স্কুলপর্যায়ের সেবা নিতে আসা শিক্ষক-অভিভাবকেরও সময় বাঁচবে। এখন প্রত্যাশা, ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটবে।
সাবস্ক্রাইব না করলে নিউজ পড়তে পারবেন না 📢