প্রতিনিধি ১৩ অক্টোবর ২০২৫ , ১:৫৪:৫৫
✍️ সম্পাদকীয়
দেশের শিক্ষকরা আজ রাস্তায়, কিন্তু হাতে বই নয় — হাতে প্ল্যাকার্ড। কণ্ঠে জ্ঞান নয় — ক্ষোভের স্লোগান।
তাদের দাবি সামান্য নয়, ন্যায্য: বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ, মেডিকেল ভাতা ১,৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ।
যে রাষ্ট্র তাদের এই মৌলিক দাবি শুনতে চায় না, সেই রাষ্ট্র তার ভবিষ্যৎকে নিজের হাতে মুছে দিচ্ছে।
গত ১২ অক্টোবর রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান শুরু করেন।
কিন্তু শান্তি ভাঙে পুলিশের লাঠি, সাউন্ড গ্রেনেড ও জল কামানের আঘাতে।
চোখে ধোঁয়া, শরীরে আঘাত, রক্তে রঙা রাস্তা — এটাই কি শিক্ষকদের প্রাপ্য?
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এখনো একটিও জবাব আসেনি।
এই নীরবতা নিছক ‘প্রশাসনিক দূরত্ব’ নয় — এটি দায়িত্বহীনতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি।
—
🔥 লাঠির বদলে সংলাপ চাই
যে শিক্ষক প্রজন্মকে মানুষ গড়ে, তার গায়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর লাঠি পড়া মানে জাতির গায়ে আঘাত।
এমনকি ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষক নেতাদের ভাষায়, “আমরা বেতন চাইনি, ভিক্ষা চাইনি — আমরা ন্যায্য অধিকার চেয়েছি।”
তাদের এই কথা রাষ্ট্রের কানে পৌঁছায়নি, কিন্তু পুলিশের বুটের শব্দে প্রতিধ্বনি উঠেছে রাজধানী জুড়ে।
এই চিত্র লজ্জার, আর যারা ক্ষমতায় বসে নীরব, তারা সমানভাবে দায়ী।
—
⚡ অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব
এখন দেশে অন্তর্বর্তী সরকার।
তাদের কাজ হওয়া উচিত প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাদের ভূমিকা এখনো ‘নীরব দর্শক’-এর মতো।
শিক্ষক সমাজের উপর দমনমূলক আচরণ চলবে, আর তারা চুপ করে থাকবে — এটা অগ্রহণযোগ্য।
আমরা জানতে চাই—কে নির্দেশ দিলো পুলিশের লাঠিচার্জ?
কে শিক্ষকদের রক্তাক্ত করল?
তাদের নাম ও পদবী প্রকাশ করুন।
স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করুন এবং দোষীদের দ্রুত শাস্তি দিন।
—
⚖️ শিক্ষকদের আল্টিমেটাম
শিক্ষক সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে—
“দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফেরা নয়।”
১৩ অক্টোবর থেকে দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মবিরতিতে গেছে।
এটি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়—এটি ন্যায়ের আন্দোলন।
শিক্ষকরা এক হয়ে দাঁড়িয়েছেন, কারণ তারা বিশ্বাস করেন—অধিকার আদায় না করলে শিক্ষা মরবে, আর জাতিও অন্ধকারে ডুবে যাবে।
—
🩸 আমাদের অবস্থান স্পষ্ট
আমরা বলছি—
১️⃣ শিক্ষকের গায়ে লাঠি চালানো রাষ্ট্রের লজ্জা।
২️⃣ দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩️⃣ আহত শিক্ষকদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪️⃣ শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি—২০% বাড়িভাড়া ও ১,৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা—অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
—
🔚 উপসংহার
রাষ্ট্রের শক্তি মানুষের সেবা করার জন্য, ভয় দেখানোর জন্য নয়।
যখন শিক্ষক রাস্তায় দাঁড়ায়, সেটা জাতির সংকটের প্রতীক।
অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এই সংকেত বোঝা—
এখনই পদক্ষেপ নিন, না হলে ইতিহাস আপনাদেরও ক্ষমা করবে না।
কারণ শিক্ষক শুধু পেশাজীবী নয়—তিনি আলোর মানুষ।
আর আলোর মানুষকে লাঠি দিয়ে নিভানো যায় না।
এম এ সাইদ (তন্ময়)
সম্পাদক
প্রতিদিন ইসলাম