প্রতিনিধি ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ২:২০:৫৫
এম এ সাইদ (তন্ময়): ওসমান হাদির মৃত্যু কোনো “দুঃখজনক বিচ্ছিন্ন ঘটনা” নয়—এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রব্যবস্থার নগ্ন প্রকাশ। রাজধানীর বুক চিরে, প্রকাশ্যে, একজন পরিচিত রাজনৈতিক কণ্ঠস্বরকে গুলি করে হত্যা করা হলো, আর আমরা এখনো শুনছি শোক, সমবেদনা ও ধৈর্যের আহ্বান। প্রশ্ন হলো—এত সহজে কি দায় শেষ হয়ে যায়?
আরো পড়ুন:
যে রাষ্ট্র তার নাগরিকের জীবন রক্ষা করতে পারে না, সে রাষ্ট্র কিসের দাবি করে? ওসমান হাদির নিরাপত্তা ব্যর্থতা কোনো তত্ত্ব নয়, এটি বাস্তব। তিনি ছিলেন আলোচিত, তিনি হুমকির মধ্যে ছিলেন—এ কথা অজানা ছিল না। তবু কেন কোনো কার্যকর নিরাপত্তা ছিল না? নাকি ভিন্ন কণ্ঠ হওয়াটাই তাঁর “অপরাধ” ছিল?
সরকার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। কিন্তু ইতিহাস বলে—বাংলাদেশে শোকের মেয়াদ শেষ হলে বিচারও অনেক সময় শেষ হয়ে যায়। জনগণ আর শোক নয়, জবাব চায়। কে গুলি করল, কার নির্দেশে করল, কীভাবে অস্ত্র এলো, কেন নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ হলো—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর না পেলে শোকের ঘোষণাও জনগণের চোখে নাটক হয়ে দাঁড়াবে।
এই হত্যাকাণ্ডের পর যে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে, তা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি বিপজ্জনক। কিন্তু সরকার যদি কেবল প্রতিক্রিয়ার দিকটাই দেখিয়ে মূল অপরাধ আড়াল করতে চায়, তবে সেটি হবে আরেকটি রাজনৈতিক চাল। হত্যার বিচার আগে, তারপর অন্য সব। বিচারহীনতার সংস্কৃতিই আজ মানুষকে ক্ষুব্ধ ও বেপরোয়া করে তুলেছে।
আরও ভয়ংকর বাস্তবতা হলো—বাংলাদেশে রাজনীতি দিন দিন মৃত্যুঝুঁকির পেশা হয়ে উঠছে। ভিন্ন মত মানেই শত্রু, ভিন্ন কণ্ঠ মানেই টার্গেট। আজ ওসমান হাদি, কাল কে? রাষ্ট্র যদি নিরপেক্ষ না থাকে, যদি আইন কেবল দুর্বলের জন্য কঠোর হয়, তবে সহিংসতা অনিবার্য হয়েই ওঠে।
এই মুহূর্তে সরকারের সামনে দুটি পথ খোলা।
এক—চিরাচরিত পথে হাঁটা: তদন্ত কমিটি, সময়ক্ষেপণ, ফাইল চাপা, একসময় বিস্মৃতি।
দুই—সাহসী পথ: নিরপেক্ষ তদন্ত, দৃশ্যমান অগ্রগতি, দোষী যেই হোক আইনের আওতায় আনা।
দ্বিতীয় পথটি কঠিন, কিন্তু রাষ্ট্র বাঁচাতে হলে এই পথই একমাত্র।
ওসমান হাদির মৃত্যু যদি আরেকটি নাম হয়ে ইতিহাসের তালিকায় যোগ হয়, তবে সেটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারহীনতা নয়—এটি হবে রাষ্ট্রের নৈতিক আত্মহত্যা।
এখন প্রশ্ন একটাই—
রাষ্ট্র কি এবার প্রমাণ করবে যে সে এখনও রাষ্ট্র? নাকি আবারও প্রমাণ হবে, এখানে জীবন ও ন্যায়বিচার দুটোই সস্তা?
দেশের সকল জেলা–উপজেলা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শর্তসাপেক্ষে সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
ইমেইল ঠিকানা:

















