প্রতিনিধি ১৮ জুলাই ২০২৫ , ১:১০:০৫
ইসলাম ডেস্ক: দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও চালু হচ্ছে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বৃত্তি পরীক্ষা হতে পারে। পঞ্চম শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে এ বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন:
অন্য রকম ‘সুখবর’ দিলেন প্রেস সচিব
এবার বৃত্তি পরীক্ষায় কারা অংশ নিতে পারবে, কীভাবে শিক্ষার্থী বাছাই করা হবে, কত বিষয় ও কোন বিষযে কত নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে- এসব বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।
বৃত্তির পরীক্ষায় কারা অংশ নিতে পারবে
এবার বৃত্তি পরীক্ষা চালুর আগে গুঞ্জন ছিল যে কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রেজিস্ট্রেশন করে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তবে সেই সুযোগ রাখা হয়নি। শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে।
অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের (যেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক একসঙ্গে) নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এরমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।
বৃত্তির পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী বাছাই যেভাবে
তিন ধরনের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। তবে সেসব বিদ্যালয়ে থাকা পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে আবার বৃত্তি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা যাবে।
অর্থাৎ, কোনো বিদ্যালয়ে ১০০ জন শিক্ষার্থী থাকলে সর্বোচ্চ ৪০ জন এবং ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলে সর্বোচ্চ ২০ জন পরীক্ষা দিতে পারবে।
কীভাবে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাছাই করা হবে, সেটাও ঠিক করে দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের নির্দেশনামতে, প্রথম সাময়িক পরীক্ষার (প্রথম প্রান্তিক) ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে হবে।
প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফলাফলে যারা প্রথম দিকে আছে, সেই মেধাক্রম অনুযায়ী ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাছাই করে নিতে হবে। তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে এ নিয়মে শিক্ষার্থী বাছাই করে সেই তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্ধারিত ছকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বৃত্তি শাখার এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালা না মানলে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পঞ্চম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যেসব বিষয়ের ওপর হবে বৃত্তি পরীক্ষা
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দীর্ঘদিন পর চালু হতে যাওয়া বৃত্তি পরীক্ষা হবে পাঁচ বিষয়ের ওপর। এরমধ্যে তিনটি বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বর করে এবং দুটি বিষয় একসঙ্গে করে ৫০ নম্বর করে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। প্রতিদিন একটি করে বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
এছাড়া বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা হবে একদিনে। দুটি বিষয়কে একটি ধরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অংশ থেকে ৫০ নম্বর এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকে ৫০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকবে। এ পরীক্ষার জন্যও শিক্ষার্থীরা ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় পাবে।
কবে হতে পারে বৃত্তি পরীক্ষা
প্রতিবছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা ও ছুটির তালিকাসহ বাৎসরিক শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৫ সালের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, প্রাথমিকে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পর বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বৃত্তির পরীক্ষার সম্ভাব্য একটি তারিখও জানিয়েছে। সেটি হলো- ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর। সেই হিসাবে ২১ ডিসেম্বর বাংলা, ২২ ডিসেম্বর ইংরেজি, ২৩ ডিসেম্বর গণিত এবং ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ তারিখে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।