প্রতিনিধি ২৭ নভেম্বর ২০২১ , ১০:১৭:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলাম ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি এ ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরাও।
আরো পড়ুনঃ
প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে যা বললেন মহাপরিচালক
তারা বলছেন, করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে রূপান্তরিত হয়ে নতুন এই রূপ নিয়েছে। মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে এটি।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জরুরি পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করা হচ্ছে।
সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর বা দেশের সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মাস্ক পরতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এক বিজ্ঞানী করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ভয়ংকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আরেক বিজ্ঞানী বলেছেন, এতটা ভয়ংকর ভ্যারিয়েন্ট তারা আগে দেখেননি।
আরো পড়ুনঃ
করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’
ওমিক্রন ঠেকাতে সরকারকে কী পরার্মশ দিচ্ছেন জানতে চাইলে পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘অন্যান্য দেশ ইতোমধ্যেই যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের সিদ্ধান্তও সেটা হওয়া উচিত।
দক্ষিণ আফ্রিকাসহ যে পাঁচটি দেশ রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ফ্লাইট বন্ধ তো করা উচিতই, সেইসঙ্গে ওই দেশগুলো থেকে যদি কোনও ভিজিটর অন্য দেশ ঘুরে দেশে আসে, ট্র্যাক করে তার আসাটাও বন্ধ করা হবে প্রথম কাজ।’
তিনি আরও বললেন, ‘যদি কেউ এসেও পড়ে, তবে তাকে বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর টেস্ট করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে দেওয়া উচিত।’
অনেক দেশেই ওমিক্রন ছড়িয়ে গেলো মন্তব্য করে অধ্যাপক সহিদুল্লা বলেন, ‘এ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে খুব।
আরো পড়ুনঃ
দাবি না মানলে কাল থেকে আবার আন্দোলন
সবাইকে এবার আগের চেয়ে ত্বড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেটা ডেলটার সময় একটু হলেও দেরিতে হয়েছিল।’
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশের ভেতর স্বাস্থ্যবিধি মানার যে প্রবণতা উধাও হয়েছে সেটা নিয়েও তারা পরামর্শ দেবেন বলে জানালেন।
তিনি বলেন, ‘উধাও হওয়া স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বলার মতো পরিস্থিতি গত কিছুদিন ধরেই তৈরি হয়েছে। এখনতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো—স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বিকল্প নেই।’
বাংলাদেশের এখন যেসব পয়েন্ট অব এন্ট্রিগুলো (বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌবন্দর) রয়েছে সেখানে ‘টাইট রেগুলেশন’ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান।
তিনি বলেন, পয়েন্টগুলোতে কঠোরভাবে পাবলিক হেলথ ম্যাজারগুলো মেইনটেইন করতে হবে।
যারা আসবেন তাদের স্ক্রিনিং করা, আরটিপিসিআর টেস্ট ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
সেইসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সকল ফ্লাইট, কানেকটিং ফ্লাইটও বন্ধ করে দিতে হবে মন্তব্য করে অধ্যাপক আর্সলান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আবার সচেতনতামূলক উদ্যোগ জোরদার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, যেসকল হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোকে আবার প্রস্তুত রাখতে হবে।
যে কোনও সময় যেন হাসপাতালগুলো পূর্ণমাত্রায় চালু করতে পারি। এখানে ঢিলেমি দেওয়া যাবে না।’
অধ্যাপক আর্সলান বলেন, ‘ডেলটার সময় আমাদের দেরি হয়েছিল প্রস্তুতি নিতে। এবার যেন সেটা না হয়, সেদিকে সর্তক থাকতে হবে। কাগজে-কলমে পুরো পরিকল্পনা এখনই করে রাখতে হবে।
একই কথা বললেন কমিটির আরেক সদস্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দেশে মাস্ক পরতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি আবার আগের মতো করতে হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করছে এই ভ্যারিয়েন্টে ভ্যাকসিনগুলো ফেইল করবে—এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা যদি কম হয়?
আমাদের দেশেতো ভ্যাকসিনও পেয়েছে কম মানুষ। তাই মাস্কের ওপর জোর দিতে হবে। হাত ধোয়ার প্রতি জোর দিতে হবে। আগের স্বাস্থ্যবিধি পালনে মানুষকে বাধ্য করাতে কঠোরতা আনতে হবে।’
অধ্যাপক নজরুল আরও বলেন, ‘সবচেয়ে যেটা জরুরি—হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা। অনেক রোগী বাড়বে। আইসিইউ বেডও বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
দাবি না মানলে কাল থেকে আবার আন্দোলন
কোনও ক্ষেত্রে যেন ঢিলেমি না হয় এবার। গতবার চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনার যে চিত্র দেখেছি, সেটা যেন এবার দেখতে না হয়। নয় তো বড় বিপদ হবে দেশের মানুষের।’