ডিলাররা লুটপুটে খাচ্ছেন গরিবের চাল - protidinislam.com | protidinislam.com |  
অপরাধ

ডিলাররা লুটপুটে খাচ্ছেন গরিবের চাল

  প্রতিনিধি ২০ জানুয়ারি ২০২২ , ৮:৫৮:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

Spread the love

ইসলাম ডেস্কঃ চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসচ্ছল মানুষের কাছে কম দরে ওএমএসের (খোলাবাজারে বিক্রয় বা ওপেন মার্কেট সেল) চাল ও আটা বিক্রি করছে সরকার।

প্রতিদিন ওএমএসের ট্রাকের সামনে মানুষের সারিও লম্বা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, গরিব মানুষের কাছে এ চাল বিক্রি না করে তা লুটে নিচ্ছেন ওএমএস দোকান ও ট্রাকের ডিলাররা।

খাদ্য বিভাগের তদারক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ চাল হাওয়া করছেন তারা। এ জন্য সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের ডিলারশিপ ও জামানত বাতিলসহ মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে খাদ্য পরিদর্শকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছে সংশ্নিষ্ট সূত্র।

জানা যায়, গত রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি তদারক দল রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলে ওএমএসের ট্রাকসেল হঠাৎ পরিদর্শনে যান। এ সময় সেখানকার ডিলার ইব্রাহীম হীরার ট্রাকে ১০টি চাল ও ১২টি আটার খালি বস্তা পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ১০ জানুয়ারি মতিঝিল এজিবি কলোনির ডিলার শাহজাহান বকাউলের ওএমএস ট্রাকসেলে লুকানো ৯টি আটা ভর্তি বস্তা উদ্ধার করা হয়। অবিক্রীত বস্তাগুলো গণনা করতে গিয়ে এ অনিয়ম ধরা পড়ে। এ ছাড়া কমলাপুরের জসীম উদ্‌দীন রোডের ডিলার আইয়ুব খানের দোকানে ১৩টি বস্তায় ৩৯০ কেজি চাল ও সাতটি বস্তায় ৩৫০ কেজি আটা পাওয়া যায়নি।

গত ১৯ আগস্ট জুরাইনের ডিলার মো. শাকিলের ট্রাকসেলে ৭০০ কেজি চাল পাওয়া যায়নি। এ জন্য জুরাইনের খাদ্য পরিদর্শক ডালিয়া পারভীন, রেশনিং কর্মকর্তা জয়কৃষ্ণ গুপ্ত, তদারককারী কর্মচারী আহসান হোসেনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এসব চাল ও আটা কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদারক কমিটির সদস্যরা। ডিলারদের পক্ষে ট্রাকে যারা চাল ও আটা বিক্রি করছিলেন, তাদের কোনো অনুমতিপত্র পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুর কাটাসুরের ডিলার মহিউদ্দিনের দোকানে ও মোহাম্মদপুর ময়ূর ভিলার ডিলার মরিয়ম বেগমের ট্রাকে পাওয়া যায়নি মজুদ ও পরিদর্শন রেজিস্ট্রার। বস্তায় বিতরণ করা সিল ছিল সম্পূর্ণ অস্পষ্ট।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সমকালকে বলেন, ওএমএস বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম অনেক বেড়েছে। এ জন্য তদারক দল গঠন করে পরিদর্শন করা হচ্ছে। যেসব ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভালোভাবে তদারকির জন্য ওএমএসের ট্রাকের সংখ্যাও কমানো হয়েছে।

ঢাকা রেশনিংয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক সুরাইয়া খাতুন সমকালকে বলেন, গরিবের চাল আত্মসাতের বিরুদ্ধে সবাইকে একাট্টা হতে হবে। তাহলে অনিয়ম দূর করা সম্ভব হবে। খাদ্য বিভাগের তদারক কর্মকর্তারা ওএমএসের অনিয়ম রোধে কঠোর ভূমিকা রাখছেন।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
সঠিকভাবে তদারকি করতে না পেরে রাজধানীর অধিকাংশ ট্রাকে ওএমএসে চাল-আটা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গত ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরে ২০টি ওএমএস ট্রাকসেল থেকে ১০টি ট্রাকসেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বাকি ১০টি ট্রাকসেলের মধ্যে পাঁচটির প্রতিটিতে তিন মেট্রিক টন আতপ ও এক টন আটা দেওয়া হচ্ছে। তবে অন্য পাঁচটির প্রতিটিতে তিন টন সিদ্ধ চাল ও এক টন আটা বিক্রি বহাল রয়েছে।

এ ছাড়া ১১০টি দোকানের প্রতিটিতে এক টন চাল ও এক টন আটা বিক্রি করা হচ্ছে। ওএমএসের পরিমাণও কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। খাদ্যমন্ত্রী সেই প্রস্তাব অনুমোদন না করে চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ওএমএসের চাল ও আটা বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি রাজধানীতে খাদ্য বিভাগের তদারকি কর্মকর্তা ছিলেন আটজন। এর মধ্যে সাতজনকে বদলি করা হয়েছে।

এরপর ৬ ডিসেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবদের নেতৃত্বে তদারক দলও গঠন করা হয়।
ওএমএস বিতরণ কার্যক্রম তদারকের টিম লিডার ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খাজা আব্দুল হান্নান সমকালকে বলেন, ওএমএসের তদারকি জোরদার করা হয়েছে।

এতে বেশ কিছু ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ এসেছে। খবর সমকাল

ENGLISH