যে কারণে আটকে আছে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা - protidinislam.com | protidinislam.com |  
জাতীয়

যে কারণে আটকে আছে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা

  প্রতিনিধি ২৬ অক্টোবর ২০২৩ , ১:০১:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

Spread the love

ইসলাম ডেস্ক: সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় বদলিব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার প্রদর্শক ও শিক্ষকদের। নিজ জেলা থেকে দূর-দূরান্তে কর্মরত এমন ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। সম্প্রতি এই জনবল বদলিতে নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়া নীতিমালায় রাখা হয়েছে ‘পারস্পরিক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন’ ব্যবস্থা।

তবে নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হলেও বদলি ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে বলে দাবি করছেন বেসরকারি শিক্ষকরা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি, এমপিও নীতিমালায় ‘শূন্যপদ সাপেক্ষে বদলি’ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে ‘পারস্পরিক বদলি’। অর্থাৎ দুই প্রতিষ্ঠানের সমপদে কর্মরত শিক্ষক, প্রদর্শক ও প্রভাষকরা আপসে সম্মতির মাধ্যমে একে অন্যের স্থানে বদলি হতে পাররেন, যা একজন শিক্ষকের পক্ষে খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য।

এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ শিক্ষক পারস্পরিক বদলির সুফল ভোগ করতে পারবেন। অন্য শিক্ষকরা বদলি ব্যবস্থাপনা থেকে বঞ্চিতই থেকে যাবেন।

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জামালপুর কলেজের সমাজকর্ম বিষয়ের প্রভাষক শাকিলা আক্তার বলেন, ‘চাকরি পাওয়ার আশায় প্রথমে দূর-দূরান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আবেদন করেছি।

ভেবেছিলাম, পরবর্তী গণবিজ্ঞপ্তিতে কাছের জেলা বা উপজেলায় শূন্যপদে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারব। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ না দেওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। নতুন নীতিমালা হলে আমাদের সমস্যা চিরস্থায়ী হতে চলেছে।’

উজিরপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক মো. সরোয়ার আলম বলেন, সমপদে কোন জেলা বা উপজেলায় কোন শিক্ষক পারস্পরিক বদলিতে রাজি হবেন, এটা খুঁজে বের করা শিক্ষকদের জন্য কষ্টসাধ্য। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষক বদলি হতে চাইলেও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

চট্টগ্রামে পূর্ব সন্দ্বীপ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ আলী বলেন, শূন্যপদে বদলির নীতিমালা করা হলেও খুব কমসংখ্যক শিক্ষক শহরে যেতে পারবেন। কারণ শহর পর্যায়ে খুব কমসংখ্যক পদ ফাঁকা থাকে। শূন্যপদে বদলির সুযোগ থাকলে অনেকেই নিজ জেলা বা উপজেলায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক আ স ম আব্দুল খালেক বলেন, আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বদলিসংক্রান্ত একটি নীতিমালা করা হচ্ছে। রায়ের বাংলা অনুবাদ করলে দেখা যায়, ‘পারস্পরিক বদলি’ ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিবসহ মাউশির মহাপারিচালক বেশ আন্তরিক। বদলিব্যবস্থাকে সহজ করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এগুলো আরো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত নীতিমালা তৈরি করা হবে।

এর আগে ২২ অক্টোবর ‘পারস্পরিক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের খসড়া নীতিমালা’ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খসড়া প্রতিবেদনটি চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে ওই দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, মাউশির মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় উপস্থিত মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বদলি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। বদলি কার্যক্রম পরিচালনা করবে মাউশি। সফটওয়্যারের মাধ্যমে সহজ প্রক্রিয়ায় ও সুষ্ঠুভাবে বদলি কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে কী ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করা যায় এবং আনুষঙ্গিক আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ENGLISH