প্রতিনিধি ২ নভেম্বর ২০২১ , ১১:০৮:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলাম ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করা দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে জোর করে ফোকাস কোচিং সেন্টার থেকে অন্য কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
আরো পড়ুনঃ
সরকারি কর্মচারীদের নতুন চাকরিতে আবেদন করতে হলে যা করতে হবে
পদন্নোতির সুযোগ বাড়লো বেসরকারি শিক্ষকদের
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি নিজেই বিষয়টি জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন জাকারিয়া।
মোহাম্মদ জাকারিয়া লেখেন, ‘আমি ফোকাস কোচিং সেন্টারের ফার্মগেট শাখায় আছি। লাইভের সময় হঠাৎ বাইরে হুড়োহুড়ি। কিছুক্ষণ পর কিছু লোকজন ঢুকল। ঢুকেই বলল, ‘এই তোরা কি মিটিং করিস নাকি?’ তারা ফোকাসের ভাইদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করল।
আমাকেও বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করল। এক পর্যায়ে টানাটানি করল। তাতেও না নড়ায় একজন মাথায় থাপ্পড়ও দিল। এক পর্যায়ে দেখলাম একটা কোচিং-এর কিছু টিচার এলো, তারা জোর জবরদস্তি করে আমাকে দিয়ে বলাতে চাইল আমি তাদের কোচিং-এর শিক্ষার্থী।’
তিনি লেখেন, ‘আমার যদি কিছু হয় তাহলে তারা দায়ী থাকবে। এখন ফার্মগেটেই আছি। টিচাররূপী কিছু কুলাঙ্গার চলে গেছে। কোচিং-এর নাম বললাম না। ক্ষমা করে দেবো বলেছি, তাই ক্ষমা করে দিলাম।
আশা করি, আর জীবনেও এমন কাজ করবেন না। এবং টিচাররূপী কুলাঙ্গারগুলোও মানুষ হবেন। আমি ফোকাসেই কোচিং করেছি। অন্য কোথাও কোচিং করিনি।’
এদিকে মোহাম্মদ লিমন নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জাকারিয়াকে আইকন প্লাস কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী দাবি করা হয়।
তিনি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আইকন প্লাস যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে ১ম স্থান অধিকারী জাকারিয়াকে অভিনন্দন।’
ফেসবুকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ জানিয়ে জাকারিয়া লেখেন, ‘আমি এখানে শুধুমাত্র একটি ফ্রি ক্লাস করেছিলাম।
তখন ওরা পরীক্ষা নিয়েছিল, ওখানে ফার্স্ট হয়েছিলাম। ফ্রি ক্লাস করলেই কোচিংয়ের ছাত্র হয়, জানতাম না।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইকন প্লাস কোচিং সেন্টারের সমন্বয়ক আজিজ খান।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এটা মোটেও সত্য নয়, ব্যাপারটা এমন ছিল না। আমাদের ও ফোকাসের অফিস একই বিল্ডিংয়ে অবস্থিত। ওরা (ফোকাস কর্তৃপক্ষ) নাকি অফিস বন্ধ করে কার্যক্রম চালাচ্ছিল।
তখন নিজ থেকে তেজগাঁও থানা পুলিশ তাদের ইউনিটকে ইনফর্ম করেছে, ওখানে অফিস বন্ধ করে কী হচ্ছে দেখার জন্য। এরপর ওখানে লোকজন জড়ো হয়ে গেদারিং করছে দেখে আমরা গিয়েছি।
এর বেশি কিছু নয়। ওই ছাত্র (জাকারিয়া) প্রথম দিকে আমাদের এখানে কোচিং করেছে। তাই আমাদের ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ থেকে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।
ফোকাস কোচিং সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মওদুদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দুপুরে জাকারিয়াকে নিয়ে ফেসবুক লাইভে গিয়েছিলাম। বাইরে একটি কোচিংয়ের শিক্ষকসহ বহিরাগত অনেকের উপস্থিতি দেখে সন্দেহ হলো।
কারণ তাদের চেহারা অন্যরকম ছিল। এর আগেও আমাদের অনেক শিক্ষার্থীকে তারা জোর করে নিয়ে নিজেদের শিক্ষার্থী বলে প্রচার করেছে। তাই আমরা কোচিংয়ের শাটার নামিয়ে দেই। এরপর তারা আমাদের শাটারে ধাক্কা দেওয়া শুরু করে।
আমরা শাটার খুলে দিলে তারা ভেতরে ঢুকে। এরপর তারা আমাদের বের করে দেয়। তারা চেয়েছিল জাকারিয়াকে ফুল দিয়ে তাদের শিক্ষার্থী বলে প্রচার করবে।
কিন্তু জাকারিয়া রাজি না হওয়ায় তার ওপরও হাত তুলে। একপর্যায়ে জাকারিয়ার শক্ত অবস্থানের কারণে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।’
এবার ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলে প্রথম হয়েছেন জাকারিয়া। তার প্রাপ্ত নাম্বার ৮০ দশমিক ৫।
দাখিল ও আলিমের ফলসহ মোট প্রাপ্ত নাম্বার ১০০ দশমিক ৫। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।