প্রতিনিধি ১৪ জুন ২০২৩ , ৬:২১:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলাম ডেস্ক: মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এ মুহূর্ত্বে বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের একটি হোটেলে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বশেষ স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান কোডার্স ট্রাস্টের ক্যাম্পাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারীকরণ হলে শিক্ষার মান বাড়বে এমন নিশ্চয়তা পেলে ভবিষ্যতে সরকার সামর্থ্য অনুযায়ী জাতীয়করণের চিন্তা করবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষায় বিশাল অংশ বেসরকারি। সরকার শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, বই, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন আইসিটি ল্যাবসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পরও সরকার বিদ্যালয়ের আয় থেকে এক টাকা পায় না। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ হলে শিক্ষার মান বাড়বে কি না, এমন সংশয় সরকারের আছে। সরকার সব চিন্তা করে ভবিষ্যতে সামর্থ্য অনুয়ায়ী কাজ করবে। তবে এই মুহূর্তে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের কথা ভাবছে না সরকার।’
এর আগে কোডার্স ট্রাস্ট ক্যাম্পাসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীন আখতার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে টানা তিন দিন ধর্মঘট শেষে গতকাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিলে আগামী ১১ জুলাই থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
এ সময় শিক্ষক নেতারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫% উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
নেতারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
তারা বলেন, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ গত ঈদুল ফিতরে ১০০% উৎসব ভাতা প্রদান না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা আশাবাদী আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বে ১০০% উৎসব ভাতা প্রদান করেন।
শিক্ষক নেতারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪% কর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।