ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতার কথা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু - protidinislam.com | protidinislam.com |  
অপরাধ

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতার কথা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু

  প্রতিনিধি ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ , ১০:৪৫:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন যে গাজায় যুদ্ধ শেষ হলে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করবেন। বৃহস্পতিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু গাজায় ‘সম্পূর্ণ বিজয় না হওয়া পর্যন্ত’ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, হামাসকে ধ্বংস এবং অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আসনে ‘আরও অনেক মাস’ সময় লাগতে পারে।

তিনি বলেন, জর্ডান নদীর পশ্চিমের সমস্ত ভূমির ওপর ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। যেটি ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত করবে। খবর-বিবিসি

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এটি একটি প্রয়োজনীয় শর্ত এবং এটি (ফিলিস্তিনের) সার্বভৌমত্বের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কি করতে হবে? আমি আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের এই সত্যটি বলি এবং আমাদের ওপর এমন একটি বাস্তবতা (ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা) চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টাও আমি বন্ধ করে দিই যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার ক্ষতি করবে।

গাজায় হামলার পর এ পর্যন্ত সেখানে ২৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। সেখানকার জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলের এমন আক্রমণাত্মক হামলার লাগাম টানতে এবং যুদ্ধের টেকসই সমাপ্তির জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনায় জড়িত হওয়ার জন্য তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক বিশ্ব।

যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্ররা চিরশত্রু এই দেশের সংঘাত নিয়ন্ত্রণে ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধান’ প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেন যেখানে ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কথা বলে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে নিজেদের ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইহুদিদের পুনর্বাসন করা হয়। তারও আগে থেকে ওই অঞ্চলের আরবদের উচ্ছেদ করে ব্রিটেন। এরপর থেকে অবৈধভাবে পর্যায়ক্রমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে বসানো হয় ইহুদি বসতি। এমনকি মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে পবিত্র আল-আকসা মসজিদও নিয়ন্ত্রণে নেয় জায়ানবাদীরা।

এসব নিয়ে লেগেই আছে সংঘাত। ফিলিস্তিনিরা কখনোই নিজেদের বসতভিটা হারানো এবং আল-আকসার প্রার্থনায় বাধা দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি, মেনে নেননি জাতিসংঘের দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানও। তারপরও এতেই একমাত্র সমাধান দেখেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা। তারা সেই সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসানে দুই রাষ্ট্র সমাধানের ধারণা কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে আলোচিত হয়ে আসছে। এই কূটনীতির মূল ভিত্তি ইসরায়েলের পাশাপাশি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।

ফিলিস্তিনিদের ভূমি উদ্ধারের আন্দোলন নিয়ে বহু সংঘাত-যুদ্ধ হলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল দ্বিরাষ্ট্রের সমাধানের কথা বলেছে। কার্যত তারা সমাধান করেনি। এখন ইসরায়েল পুরো জেরুজালেম নগরীকেই তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায়। আল-আকসায় প্রার্থনায় বাধা ও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ নিয়ে বিরোধ ও সংঘাতে প্রাণহানিও ঘটেছে প্রচুর। এমন পরিস্থিতিতে ফের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সংঘাতের ‘একমাত্র জবাব’। তিনি দ্বিরাষ্ট্রের সমাধানের কথা বললেও বাস্তবে তার এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। এ জন্য বিশ্নেষকরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে এই সংকটের সমাধান দেখা যাচ্ছে না।

আরও খবর

Sponsered content

ENGLISH